সাপাহারে জমজমাট পাইকারী সবজি বাজার, নির্দিষ্ট স্থানে হাট লাগানোর দাবী

মনিরুল ইসলাম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি
মনিরুল ইসলাম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৪:৩২ অপরাহ্ন, ২৭ অগাস্ট ২০২১ | আপডেট: ৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, ১৯ মে ২০২৪

কাকডাকা ভোর থেকে হাঁকাহাঁকির অন্ত নেই। আপন মনে মাঠে ফলানো ফসল সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। টাটকা তাজা ফসল তুলে নিয়ে আসছেন বেঁচার জন্য। কেউবা ফসল তুলে বস্তায় বা ডালিতে পসরা সাজিয়ে বসে আছেন ক্রেতার আশায়। চারদিকে যেন ধুম পড়েছে টাটকা কাঁচা পণ্য কেনা-বেঁচার। বলছিলাম সাপাহার উপজেলার সর্ববৃহৎ কাঁচা পণ্যের পাইকারী বাজারের কথা। প্রতিদিন ভোর থেকেই এরকম দৃষ্টিনন্দন বাজার বসে সাপাহার উপজেলার বাহাপুর মোড়ে। তবে এই মোড়ে রাস্তার উপর হাট বসার ফলে অনেক সময় ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ  পথচারীদের।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভোরের আজানের পর থেকেই কৃষকেরা ছোটাছুটি শুরু করে নিজ হাতে উৎপাদিত পণ্য পাইকারের কাছে বেঁচার জন্য। প্রথমে দল বেঁধে বাগান থেকে হারভেষ্টিং করে নানা প্রজাতির সবজি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বেগুন, পটল , ঝিঙ্গা ,করলা, উচ্ছে,লাউ ইত্যাদি। এই পাইকারী বাজারে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে আসেন পাইকাররা। টাটকা সতেজ সবজি কেনার জন্য পাইকারদেরও উৎসাহের কমতি নেই। তারা পাইকারী দরে এখান থেকে সবজি ক্রয় করে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রয় করেন।

সম্প্রতি সময়ে এই উপজেলায় যত কাঁচা সবজি উৎপাদন হয় তার বেশিরভাগই বাহাপুর এলাকায় হবার ফলে পাইকারী বাজারটা এখানেই বসে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোন স্থান না থাকার ফলে রাস্তার উপরেই বসে পাইকারী বাজার । যাতে করে পথচারীদের অনেক সময় ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, করোনাকালীন সময়ে লকডাউন থাকার ফলে এই বাজার অনেক থমকে গেছিলো। কিন্তু বর্তমানে এই অঞ্চলে করোনার তেমন প্রভাব না থাকার ফলে আবারো জমে উঠেছে এই পাইকারী বাজার।

কৃষক মোকলেছুর রহমান বলেন, আমি মোট তিন বিঘা জমিতে করলা চাষ করেছি। বর্তমানে আগের তুলনায় অকেটা বাজারমূল্য কম।

বাজারমূল্য কমের বিষয় নিয়ে আরেক চাষী হাসান আলী জানান, বর্তমানে পাইকার কম আসার ফলে স্থানীয় পাইকাররা কম দামে সবজি ক্রয় করছেন।

পাইকাররা বলছেন, এই অঞ্চলে সাশ্রয়ী মূল্যে একেবারে টাটকা সবজি পাওয়া যায় বলে আমরা আগ্রহ করে কিনতে আসি। যাতে করে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট সবজিটা আমরা ভোক্তার নিকট পৌঁছাতে পারি।

রাজধানী থেকে আসা পাইকার কামরুল হাসান জানান, সাপাহারের বাহাপুরে একদম বাগান থেকে হারভেষ্টিং করা সবজি পাওয়া যায়। যার ফলে আমরা  এখান থেকে সবজি কিনতে অনেকটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। এছাড়াও এখানে অনেকটাই সাশ্রয়ী মূল্যে সবজি কিনতে পাওয়া যায়।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে এলাকার চাষীদের সকল প্রকার পরামর্শ অব্যহত আছে বলছেন উপ সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আতাউর রহমান সেলিম।

স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, উপজেলার সর্ববৃহৎ পাইকারী বাজার বসে এই বাহাপুর মোড়ে। কিন্তু রাস্তার উপর বাজার বসার ফলে পথচারীদের নানাবিধ সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। বর্তমানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি বাজারের জন্য সুনির্দিষ্ট একটি স্থান ঠিক করে দেন তাহলে অনেকটা সুবিধা হতে পারে।

নির্দিষ্ট স্থানে হাট বসার বিষয় নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্যাহ আল মামুন বলেন, আমরা সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করবো। যাতে করে পথচারীদের কোন সমস্যা না হয় সে বিষয়টি খেয়াল রাখা হবে।