ধামইরহাটে মহিলা ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক কর্তৃক অর্ধ শতাধিক গাছ চুরি করে-২টি ছ’মিলে বিক্রি

মো. আবু মুছা স্বপন, নওগাঁ প্রতিনিধি
মো. আবু মুছা স্বপন, নওগাঁ প্রতিনিধি মো. আবু মুছা স্বপন, নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২:৪২ অপরাহ্ন, ০৯ অক্টোবর ২০২১ | আপডেট: ৫:৫০ পূর্বাহ্ন, ১৯ মে ২০২৪

নওগাঁর ধামইরহাটে মহিলা ডিগ্রী কলেজের গাছ চুরির অভিযোগ উঠেছে খোদ ওই কলেজের শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক ও সুধী মহল মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। গাছ চুরির কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত শিক্ষক বিষয়টি ধামা চাপা দিতেও মধ্যরাতে গোপন মিটিং ও বিভিন্ন মহলকে অনুরোধ করেছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল  রাতের বেলায় গাছ চোর প্রভাষককে গেটের চাবী দিয়ে সহযোগিতা করেছেন বলেও অবিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, ধামইরহাট মহিলা ডিগ্রী কলেজের চতুর্দিকে বাউন্ডারী ঘেরানো থাকায় লোক চক্ষুর আড়ালে মহিলা ডিগ্রী কলেজের ইংরেজি প্রভাষক নাসির উদ্দিন কলেজ বাউন্ডারী সংলগ্ন আকাশমনি, নিম, বন কাঠালসহ বিভিন্ন গাছ চুরি করে কেটে স্থানীয় দুটি ছ’মিলে বিক্রয় করে। বিষয়টি কলেজের অন্যান্য শিক্ষক ও স্থানীয়দের মাঝে জানা-জানি হলে শোরগোল পড়ে পুরো উপজেলায়। ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে ৯ অক্টোবর সকালে মহিলা ডিগ্রী কলেজে একদল সাংবাদিক গেলে সেখানে কাটাগাছের শেকড়ের অংশ দেখতে পাওয়া যায়, এবং ঘটনা ধামা চাপা দিতে মাটি দিয়ে গাছের গোড়াগুলি ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করেছে অভিযুক্ত শিক্ষক প্রভাষক নাসির উদ্দিন গং, নতুন করে রোপন করা হয়েছে আমের চারাও। সুকৌশলে গাছ চুরির এই ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল ও সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকও জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে, তবে অভিযুক্ত রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক নিজেকে নির্দোষ দাবী করেন। কলেজের চাকুরীরত এমএলএসএস আব্দুল ওয়াজেদ জানান, গত সপ্তাহে গাছের ডালপালা খড়ি হিসেবে ভ্যানযোগে অন্যত্র নাসির স্যার বিক্রয় করতে চাইলে আমি দরদাম করে ১ হাজার টাকায় ৩ ভ্যান ঘড়ি ক্রয় করেছি। ভাড়ায় চালানো স্থানীয় ‘ছ’ মিলের মালিক হারুনুর রশিদ বিদ্যুতের সাথে সাক্ষাতে কথা হলে তিনি জানান, বিষয়টি আমি প্রথমে জানিনা পরে শুনেছি, তবে ‘ছ’ মিলের মিস্ত্রি খালেক জানান, গত ৬ অক্টোবর ১৫টি আকাশমনি ও ৬টি নিম গাছের টুকরা নাসির প্রভাষককে এখানে গাছ বিক্রয় করে ২ হাজার ৯ শত টাকা দিয়েছি, আকাশমনি অন্য পাটির কাছে বিক্রয় হয়েছে, নিমগাছগুলি ছ মিলেই এখনও আছে।’ টিএন্ডটি মোড়স্থ অপর ‘ছ’ মিলে গাছের সন্ধান নিতে গেলে, ‘ছ’ মিলে কোন লোক পাওয়া যায়নি।
অভিযুক্ত প্রভাষক নাসির উদ্দিন চুরি করে গাছ কাটার অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, ‘আমি ম্যানেজিং কমিটির ২/১ জন সদস্যের অনুমতি সাপেক্ষে কয়েকটি আকাশমনি ও নিম, বনকাঠালসহ ৮/১০টি গাছ বিক্রি করে টিএন্ডটি মোড়ে ৯৫০ টাকা, ১ হাজার টাকায় খড়ি ও ২ হাজার ৯শত টাকায় বিদুতের ছ মিলে গাছ বিক্রি করেছি, তবে আমি ইচ্ছা করে গাছ কাটিনি।’
ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল আশরাফুল ইসলাম জানান, ‘ঘটনাটি আমি জানিনা ও আমি জড়িত এটি সত্য নয়, তবে শিক্ষকদের মুখে শুনেছি ৪০টি গাছ কাটা হয়েছে, কেউ কেউ আরও বেশিও বলেছে, আমি আজই জরুরী মিটিং দিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী ড. ফিজার আহমেদ জানান, ‘আমরা গভর্নিং বডির পক্ষ থেকে কলেজের অতি পুরোনো গাছগুলো কাটার অনুমতি চেয়ে সরকারি নির্দেশনার অপক্ষোয় রয়েছি, কিন্তু তার তার আগে এভাবে গাছ কেটে রাতের আধারে বিক্রি করা অত্যন্ত নিগৃহিত কাজ, আমরা অনতি বিলম্বে জরুরী সভা ডেকে দোষী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’