বুয়েট পাসের পরেই আমার রাজনীতি শুরু : জিএম কাদের

বিশেষ প্রতিবেদক-
বিশেষ প্রতিবেদক- বিশেষ প্রতিবেদক-
প্রকাশিত: ৪:৩১ পূর্বাহ্ন, ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | আপডেট: ১২:৪২ পূর্বাহ্ন, ১৯ মে ২০২৪

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) সব রকমের রাজনীতিমুক্ত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের।

তিনি বলেন, ‘এখনও আমাদের  প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়টি ভালো আছে। আমি চাইব প্রতিষ্ঠানটি যেন কোনো রাজনৈতিক দলের আধিপত্যের কেন্দ্রে পরিণত না হয়। এখানে শিক্ষার্থীরা যেন পড়াশোনা করার সুযোগ পায়। পড়াশোনা শেষ করেও রাজনীতি করা যায়। আমি নিজেও এখানে পড়াশোনা শেষ করে রাজনীতি করছি।’

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের জাতীয় যুব সংহতির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও পরিচিতি সভায় তিনি এ কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, ‘আইনের শাসনের মধ্যে দুটি প্রধান বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে আইনের চোখে সবাই সমান ও শিষ্টের পালন এবং দুষ্টের দমন। অথচ সর্বত্রই এখন দুষ্টের পালন শিষ্টের দমন চলছে।’

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখন তো অফিসিয়ালি বৈষম্য করা হচ্ছে। চাকরিপ্রার্থীদের তদন্ত করতে গিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয় ওই পরিবারে কেউ আওয়ামীবিরোধী আছে কি  না। আওয়ামী লীগবিরোধী থাকলে তাকে আর চকরি দেওয়া হয় না। এর চেয়ে বড় বৈষম্য আর কিছু হতে পারে না।‘

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের স্বাধীনতা-সংগ্রাম হয়েছিল বৈষম্যমুক্ত সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে। এখন প্রশ্ন জাগে, এই বৈষম্যের জন্যই কি আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম? এখন অফিসিয়ালি ডিক্লেয়ার দিয়ে বৈষম্য করা হচ্ছে।’ এ সময় যুব সংহতিকে এসবের বিরুদ্ধে সোচ্ছার হওয়ার আহ্বান করেন জিএম কাদের।

বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘সব জায়গায় কিছু লোক দিয়ে সুবিধাভোগীদের একটি বলয়, একটি চক্র তৈরি করা হয়েছে। চক্রটি এই দেশটিকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছে। এই দেশের জনগণের কাছে যে জবাবদিহি থাকার কথা, কোথাও সেই জবাবদিহি নেই। ফলে আমরা আর বৈষম্যহীন সমাজ তৈরি করতে পারছি না। কোনো ক্ষেত্রেই আজ সুশাসন নেই।’

পরিচিতি সভায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা লক্ষ করছি ক্ষমতাসীন দল কীভাবে প্রহসনের নির্বাচন করেছে। তারা একটি আসনে দলীয় মনোনয়ন দিচ্ছে। আবার সেই আসনে আরেকজনকে স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। আমাদের এখানে ঘাপটি মেরে থাকা কিছু দালাল চক্র রয়েছে। তারা এর বিরুদ্ধে কথা বলছে না। আমরা জাতীয় যুব সংহতিকে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান করব।’

জাতীয় পার্টিকে সামনের দিনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য জাতীয় যুব সংহতির কোনো বিকল্প নেই মন্তব্য করে রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘আপনারা যারা যুব সংহতির বিভিন্ন পদে পদায়ন হয়েছেন, তারা স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করবেন। মনে রাখবেন, জাতীয় পার্টিতে অতীতে ছয়-সাতটা ভাঙন হয়েছে। সমস্ত ভাঙন উপেক্ষা করে জাতীয় পার্টি আজও মূলধারার রাজনীতিতে টিকে আছে। জিএম কাদেরের নেতৃত্বে আগামীতেও জাতীয় পার্টি টিকে থাকবে।’

পরিচিতি সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য খলিলুর রহমান, জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচএম শাহরিয়ার আসিফ, সাধারণ সম্পাদক আহাদ উদ্দিন চৌধুরী শাহিন, যুব সংহতির সহসভাপতি লায়ন এমরানুল হক প্রমুখ। এ ছাড়াও জাতীয় পার্টির বিভিন্ন স্তরের কেন্ত্রীয় ও  জেলা পর্যায়ের নেতারা পরিচিতি সভায় উপস্থিত ছিলেন।