লক্ষ্মীপুরে হামলায় আহত ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ। গ্রেফতার-৩

স্টাফ রিপোর্টার-
স্টাফ রিপোর্টার- স্টাফ রিপোর্টার-
প্রকাশিত: ৪:৫১ অপরাহ্ন, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | আপডেট: ৯:৩৪ পূর্বাহ্ন, ০৬ মে ২০২৪

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনায় ৪ দিন পর আহত ছাত্রলীগ নেতা এম সজীব মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত ২ টার দিকে ঢাকার পপুলার হাসপাতালের নিবীড় পর্যবেক্ষণ কক্ষে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে গত ১২ এপ্রিল (শুক্রবার) রাত ২ টার দিকে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পাঁচপাড়া গ্রামের যৈদের পুকুরপাড়ে অতর্কিত হামলায় সজিবসহ ৪ জন আহত হয়। অভিযোগ রয়েছে তাদেরকে গুলিও কুপিয়ে আহত করা হয়েছে।

এদিকে সজিব নিহতের ঘটনায় বুধবার সকাল থেকে দফায় দফায় আঃলীগ,যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সহ সজিবের অনুসারীরা চন্দ্রগঞ্জ বাজারে  সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ সহ খুনিদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবীতে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসুচী পালন করে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ প্রত্যাহার সহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে ঘটনাকে ঘিরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় আঃলীগ সহ নেতৃবৃন্ধ সেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকাজী বাবলু ও তার বাহিনীকে দায়ী করে। অবশ্য ঘটনার পর চন্দ্রগঞ্জ সেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক তাজুল সহ ৩ জনকে গ্রেফতারের কথা জানায় পুলিশ।

সজিব চন্দ্রগঞ্জ কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। তিনি চন্দ্রগঞ্জের পাঁচপাড়া গ্রামের মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে। এদিকে হামলার ঘটনার সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে সজিবের মা বুলি বেগম বাদি হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক কাজী মামুনুর রশিদ বাবলু ও সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম তাজু ভূঁইয়াসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছে। এতে ২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। এ ঘটনা সোমবার চন্দ্রগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা তাজু ভূঁইয়াসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে তাদেরকে লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক এম সজিবের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। অন্য আসামীদের ধরতে অভিযান চলছে।

উল্লেখ্য, সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জের পাচঁপাড়া যদিরপুকুরপাড় এলাকায় গত শনিবার রাত আড়াইটার দিকে ছাত্রলীগ নেতা এম সজিবসহ ৪জন ওইখানে বসে আড্ডা দিচ্ছিল।  এসময়  তাদের ওপর অতর্কিত হামলা ও  এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এতে ছাত্রলীগ নেতা এম সজিব, ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুল পাটওয়ারী ও সাইফুল ইসলাম জয় ও রাফিসহ চারজন গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের ৪জনকে উদ্ধার করে প্রথমে সদর হাসপাতালে ও পরে তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কজেল হাসপাতালে পাঠানো  হয়। এরপর এম সজিবকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক  মাসুদুর রহমান মাসুদ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি কাজী মামুনুর রশিদ বাবলুর সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দলীয় কোন্দল ও অধিপত্যা বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। সম্প্রতি কাজী মামুনুর রশিদ বাবলুর অনুসারী কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী আবদুর রহমান অনিককে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে র‌্যাব। আবদুর রহমান অনিককে গ্রেফতারের পিছনে এম সজিবের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে  ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারনা ।