কুড়িগ্রামে বাড়ছে শীতের তীব্রতা, ছিন্নমূল মানুষ বিপাকে

এ আর রাকিবুল হাসান,, কুড়িগ্রাম
এ আর রাকিবুল হাসান,, কুড়িগ্রাম এ আর রাকিবুল হাসান,, কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ১০:০৪ অপরাহ্ন, ২২ ডিসেম্বর ২০২১ | আপডেট: ৬:৩২ পূর্বাহ্ন, ১৯ মে ২০২৪

উত্তরের সীমান্তঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামে পৌষের প্রথম দিন থেকে শীতের তীব্রতা ও হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একইসঙ্গে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।

সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন জীবন-জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হওয়া শ্রমজীবী মানুষ।কনকনে ঠান্ডায় শিশু ও বৃদ্ধরা কাবু হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র বলছে, শীতের তীব্রতা বেড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করায় জেলাজুড়ে ছিন্নমূল মানুষের চরম ভোগান্তি বেড়ে যেতে পারে। তবে শীত মোকাবিলায় সরকারের সকল প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

শীতের কাপড় কেনাকাটায় ব্যস্ত স্থানীয়রা দোকানগুলোতে ভিড় বেড়েই চলছে। সামর্থ্যবানদের চাহিদা থাকায় বৈদ্যুতিক দোকানগুলোতে গিজার আর ইলেকট্রিক ক্যাটলির বিক্রি ও বাড়ছে।তবে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রান্তিক কৃষক ও খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ গুলো। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়ন এর রিস্কাচালক রফিকুল ও ভ্যানচালক সাইফুল ইসলাম তারা বলেন,রিস্কা ও ভ্যান চালানও খুবই কষ্টকর হয়ে যায়।

তারপরও জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যেও বের হতে হয়। তারা এখনো গরম কাপড় অথবা কম্বল পায়নি বলে জানান এই দুই রিস্কা ও ভ্যানচালক। প্রান্তিক মানুষের এমন কষ্টের কথা ভেবে স্থানীয় প্রশাসন শীত নিবারণে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসনের প্রকল্প বাস্তবায়ন বিভাগ। এছাড়া বেসরকারি পর্যায়েও শীতবস্ত্র বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের সীমান্তবর্তী গ্রাম মশালের চর। ওই গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর রিয়াজুল রহমান বন্যা মোকাবিলা করে পরিবার নিয়ে টিকে থাকা হামিদুলের এবারের চিন্তা শীত নিয়ে। রিয়াজুল বলেন, ‘বানে নৌকায়, মাচায় উঠে জীবন বাঁচাই। কিন্তু শীতে বৌ-বাচ্চা নিয়া আর এক বিড়ম্বনা। এর ওপর ঠাণ্ডায় কাজ করতে না পারলে খাওয়ার কষ্ট সহ্য করা লাগে।

শীত বেশি হইলে মাঠে কাজ করতে খুব কষ্ট হয়, হাত-পা হিম হয়া যায়।’ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার বলেন,শীত মোকাবিলায় জেলার ৯ উপজেলা ও তিন পৌরসভায় ৩৫ হাজার ৭০০ পিছ কম্বল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও শীতার্তদের পোশাক ক্রয়ের জন্য উপজেলার চাহিদা ভেদে ৮ থেকে ১৪ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিপুল কুমার বলেন,শীতে উপজেলার মানুষ যেন কষ্ট না পান, সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, শীতে জেলার মানুষ যেন কষ্ট না পান সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভিন্ন এনজিও থেকেও কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। উপজেলাগুলোতে সেগুলো বণ্টন করা হয়েছে। আশা করছি শীতে মানুষের কষ্ট লাঘব হবে।